আয়কর রিটার্ন নিয়ে ঝামেলার দিন শেষ।এখন আপনি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।অনেকেই জানে না কিভাবে তা করতে হয়। তবে আপনারা যারা রিটার্ন পদ্ধতি জানতে চান তারা পুরো পোস্টটি ভাল করে পড়বেন।
আজকের পোস্টটিতে আপনারা জানতে পারবেন কিভাবে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। যাদের TIN সার্টিফিকেট রয়েছে তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূল। রিটার্ন জমা না দিলে আইন অনুযায়ী শাস্তি ও জরিমানা হতে পারে।তাই আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সহজ পদ্ধতিটি জেনে নিন।
আয়কর রিটার্ন কি ?
আপনার এক বছরের আয় ব্যায়, টাকা পয়সা এবং সব সম্পদের হিসাব প্রতি বছর নির্দিষ্ট ফর্মে আপনার সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনারের কার্যালয়ে দাখিল করতে হয়, যেটাকে বলে আয়কর রিটার্ন।
আয়কর রিটার্ন দাখিল এর জন্য যা প্রয়োজন হবে
- আয়কর রিটার্ন দাখিলের পূর্বে আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২০২৪ পড়ে নিন।
- গতবছর রিটার্ন দাখিলে করলে তার কপি সঙ্গে রাখুন।
- আপনার আয় বিবরণী/ বেতন বিবরণী/ লাভ-লোকসান বিবরণী/ ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ব্যয়ের হিসাব সঙ্গে রাখুন।
- কর রেয়াত পাওয়ার জন্য আপনার বিনিয়োগ তথ্য দিন।
- কোন কিছু সম্পর্কে অবগত না থাকলে অভিজ্ঞ ব্যক্তির কাছ থেকে সহযোগিতা নিন।
- আপনার টিন সার্টিফিকেটটি সঙ্গে রাখুন।
আয়কর রিটার্ন দাখিল এর সময়সীমা
আয়কর রিটার্ন দাখিলের কিন্তু সময়সীমা রয়েছে এ বিষয়ে আপনার অবশ্যই আয়কর জমা দেওয়ার পূর্বে এই বিষয়টি অবগত হতে হবে।
প্রতিবছরের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় হচ্ছে নভেম্বর মাস।বিগত অর্থ বছরের জুলাই থেকে শুরু করে জুন মাসের ২৩ সাল পর্যন্ত আপনার আয়কর রিটার্ন আয়ের উপর কোন নির্ধারণ দাখিল করতে হয় নভেম্বর মাসে মধ্যে।অবশেষে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা ৩০ নভেম্বর থেকে বৃদ্ধি করে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত করা হয়েছে।এ সুযোগ শুধুমাত্র ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বর্তমানে চালু আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রতিবছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এনবিআর তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে এক মাস সময় বাড়িয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪–এর ধারা ১৮৪ জি অনুযায়ী প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে জানায় NBR।
ই রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম
অনলাইনে ই রিটার্ন জমা দেয়ার জন্য, আপনার TIN ও নিজ নামে রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল নম্বর দিয়ে ই রিটার্ন সিস্টেমে সাইন আপ বা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
ই রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
ধাপ ১– রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রথমে এই লিংকে ভিজিট করুন– E-ReturnRegistration
প্রথম বক্সে আপনার টিআইন (TIN) নম্বরটি লিখুন।তারপর আপনার নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দ্বারা বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা আছে এমন মোবাইল নম্বরটি লিখুন (প্রথম শুন্য বাদে)। এরপর ক্যাপচা কোডটি সঠিকভাবে লিখুন এবং সবশেষে Verify বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ ২– এই ধাপে মোবাইল ভেরিফিকেশন করতে হবে।Verify বাটনে ক্লিক করার পর আপনার মোবাইলে একটি ৬ সংখ্যার OTP Code পাঠানো হবে।
এখানে ৬ ডিজিটের ওটিপি কোডটি লিখুন এবং আপনি ভবিষ্যতে ই রিটার্ন সিস্টেমে লগ ইন করার জন্য একটি পাসওয়ার্ড সেট করুন।পাসওয়ার্ডটি অবশ্যই ইংরেজিতে Capital Letter + Small Letter + Number +Mark ব্যবহার করে সেট করবেন। যেমন হতে পারে- Dhaka123#
এরপর Submit বাটনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন।
আশা করি আপনি সফলভাবে ই রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন করেছেন। এবার সিস্টেমে সাইন ইন করে ই রিটার্ন সাবমিট করতে পারবেন।
আয়কর রিটার্ন দাখিল করার নিয়ম
আয়কর রিটার্ন দাখিল করার নিয়ম নিচে ধাপ ধাপ দেওয়া হল –
ধাপ ১: ই রিটার্ন সিস্টেমে সাইন ইন
এনবিআর ই রিটার্ন সিস্টেমে (e-Return System) ভিজিট করুন এবং ২ নং অপশন e Return এ ক্লিক করুন
ডান পাশ থেকে, আপনার TIN নম্বর, পাসওয়ার্ড ও ক্যাপচা লিখে Sign in বাটনে ক্লিক করে সাইন ইন করুন।
👉গুগল নিউজে সবার আইটি বিডি সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
সাইন ইন করার পর নিচের মত একটি ড্যাশবোর্ড পাবেন। এখানে বাম পাশ থেকে Return Submission অপশনে ক্লিক করুন।
এখন আপনার সামনে রিটার্ন জমা দেওয়ার ফর্মটি চলে আসবে এখান থেকেই স্টেপ বাই স্টেপ ইনফরমেশন দিতে হবে।
ধাপ ২: কর নির্ধারন তথ্য- Tax Assessment Information
ধাপ ৩: আয়ের তথ্য – Income Information
ধাপ ৪: আয়ের বিস্তারিত তথ্য – Income Details
ধাপ ৫: ব্যয়ের তথ্য – Expenditure
ধাপ ৬: সম্পদ ও দায় বিবরণী পূরণ
ধাপ ৭: আয়কর ও পরিশোধ – Tax and Payment
শেষ ধাপ: আপনি সাবমিট করে দিন।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
১।বাংলাদেশে ২০২৩ সালের আয়কর হার কত?
উত্তরঃ প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, আয়ের প্রথম সাড়ে ৩ লাখ টাকার ওপর কোনো কর দিতে হবে না। পরবর্তী ১ লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৩ লাখ টাকায় ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকায় ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার ওপর ২০ শতাংশ ও বাকি আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ আয়কর দিতে হবে। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়।
২।সর্বনিম্ন আয়কর কত টাকা?
উত্তরঃ বার্ষিক প্রথম ৩,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর কোন আয়কর দিতে হবে না বার্ষিক মোট আয়ের পরবর্তী ০১ লক্ষ টাকার উপর ৫%, পরবর্তী ৩,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১০% আয়কর দিতে হবে। পরবর্তী ৪,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১৫% আয়কর দিতে হবে। পরবর্তী ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২০% আয়কর দিতে হবে।
৩।কর ফেরত কি?
উত্তরঃ ট্যাক্স ক্রেডিট যে পরিমাণঅফসেট ট্যাক্স দায় বা বকেয়া কর। আয়, কর্তন এবং ক্রেডিট রিপোর্ট করার পরে, করদাতা তাদের ট্যাক্স রিটার্ন শেষ করে। রিটার্নের শেষটি ট্যাক্সে করদাতার পাওনা বা ট্যাক্স অতিরিক্ত পরিশোধের পরিমাণ চিহ্নিত করে। অতিরিক্ত পরিশোধ করা ট্যাক্স ফেরত দেওয়া হতে পারে বা পরবর্তী কর বছরে রোল করা যেতে পারে।
৪।আয়কর বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ আয়কর বিশেষ অর্থে আয়ের উপর কর। সরকারি, বেসরকারি, নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান এর কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের উপর সাধারণত আয়কর আরোপ করা হয় বিধিসম্মত নিয়মে। আয়কর হচ্ছে সরকারি রাজস্ব বা আয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস। সাধারণ অর্থে যাদের উপর কর আরোপ করা হয় তাদেরকে বলা হয় করদাতা ।
৫।বাংলাদেশে আয়কর সারচার্জ কি?
উত্তরঃ সারচার্জের হার হল 20% যাদের সম্পদের মূল্য 10 কোটি টাকা থেকে 20 কোটি টাকা পর্যন্ত এবং যাদের 20 কোটি থেকে 50 কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে তাদের জন্য 30%। এনবিআর অনুসারে, ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের করদাতাদের ৩৫% সারচার্জ দিতে হবে।
৬।বাংলাদেশে কর কত প্রকার?
উত্তরঃ বাংলাদেশে, প্রধান কর হল শুল্ক শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), সম্পূরক শুল্ক, আয়কর এবং কর্পোরেশন কর।
শেষকথা
আশা করি আজকের পোস্টটি থেকে আপনারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করার পুরো পদ্ধতিটি ভালো করে বুঝতে পেরেছেন।এই পোস্টটিতে আমরা আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে কি কি প্রয়োজন এবং কিভাবে করবেন তার সম্পূর্ণটি দেখিয়েছি। এরকম নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের সঙ্গে থাকবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য – সম্পূর্ণ ইনফরমেশন গুলো অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔
আপনার জন্য-
মোবাইল দিয়ে টিন সার্টিফিকেট তৈরি
↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇
- ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় বাংলাদেশি ই সার্ভিস সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇
➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন।
➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।
➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।